গতকাল (৩১ আগস্ট ২০২৫) সন্ধ্যার পরে খুলনার রূপসা সেতুর পিলারের বেজমেন্ট-এর ওপর হতে একটি মরদেহ পুলিশ উদ্ধার করে। পরে দেখা যায়, ওই মৃতদেহটি হচ্ছে খুলনায় কর্মরত সাংবাদিক ওহায়েদুজ্জামান বুলু’র।
পুলিশের ধারণা, সে আত্মহত্যা করেছে। সেতু হতে লাফ দিয়ে নীচে পড়ায় এই মৃত্যু; কিন্তু মৃতদেহ দেখে একাধিক জন বলছেন, এটি হত্যাকাণ্ড হতে পারে। দীর্ঘদিন সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত থাকায় একাধিক জন আমার কাছেও প্রশ্ন করেছেন, এটি কী হত্যা, না-কি আত্মহত্যা!
আমার ধারণা, এটি আত্মহত্যার চেয়ে হত্যাকাণ্ড হওয়ার সম্ভাবনা বেশী। কেন এমন আশঙ্কা করছি; তার কারণ:
এক, সাংবাদিক বুলু’র ব্যক্তিগত ও পারিবারিক প্রতিপক্ষ ছিল। তাঁরা যে জমিতে বসবাস করতেন, সেই জমির মালিকানা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আইনি বিরোধ চলছিল। প্রতিপক্ষ অর্থ-বিত্তে বেশ প্রভাবশালী। কিন্তু আইনিভাবে জমির মালিকানা স্বত্ত বুলু’র দিকেই ছিল।
দুই, বুলু দম্পতি নি:সন্তান ছিলেন। সাম্প্রতিককালে তাঁর স্ত্রীর মস্তিস্কে সমস্যা দেখা দিয়েছিল। তিনি গত মে মাসের কোন একদিন বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেননি। (সাংবাদিক বুলু ঘটনার সময় বাড়িতে ছিলেন না। তবুও তিনি আমাকে এ কথা বলেছিলেন।)
তিন, বুলু একাকি বাসায় থাকতেন। আত্মহত্যা করতে চাইলে বাসা-ই তাঁর জন্যে নিরাপদ জায়গা ছিল। কেন তিনি আত্মহত্যার জন্যে রূপসা সেতু পর্যন্ত যাবেন!!
চার, বুলু’র প্রতিপক্ষ গোষ্ঠীটি তাঁর স্ত্রীকে কৌশলে আগে ভাগে সরিয়ে দিয়ে পরিকল্পিতভাবে তাঁকে হত্যা করে আত্মহত্যার নাটক করতে পারে।
পাঁচ, খুলনায় এখন প্রায় প্রতিদিনই এক বা একাধিক হত্যাকাণ্ড ঘটছে। এরকম একটি সময়ে প্রতিপক্ষ বা যেকোন তৃতীয় পক্ষও এমন একটি ঘটনা ঘটিয়ে পেশাজীবী সাংবাদিকদের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য এই কাজটি করতে পারে।
এ কারণে আমার মনে হয়, এই ঘটনাটির পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হওয়া উচিত। অবশ্য, খুলনা শহরের চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডগুলোরও সুষ্ঠু তদন্ত হয়নি। তদন্তে অপরাধী চিহ্নিত হয়নি, এমন নজিরও অনেক। তবুও যথাযথ কর্তৃপক্ষের উচিত তদন্ত করেই সিদ্ধান্তে আসা; তা না হলে দায় এড়ানোর মনোভাব প্রকাশিত হতে পারে।
সাংবাদিক বুলু নিহত হওয়ার প্রকৃত ঘটনা উন্মোচিত হোক।
খুলনা গেজেট/এনএম